আজ ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মেঘনা গর্ভে বিলীন হচ্ছে নরসিংদীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীতে মেঘনার কড়াল গ্রাসে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মেঘনার তীরবর্তী বাড়িঘরসহ বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে মেঘনা নদীর তীরবর্তী ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দাসহ ভ্রমন পিপাসু মানুষরা।

নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চল নজরপুর, করিমপুর,চরদীঘলদী, মহিষাশুড়া ও পাইকারচর ইউনিয়নসহ বেশকয়েকটি চর এলাকাকে নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করার জন্য ইতিমধ্যেই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে যা বর্তমানে শেষের দিকে। কিছু কিছু এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু এবার বর্ষার শুরুতেই মেঘনার ঢেউয়ের তোড়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে চরাঞ্চলের মেঘনা তীরের জমিগুলো। ভাঙ্গন কবলিত এলাকা গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নরসিংদীর মিনি কক্সবাজার খ্যাত নজরপুরের টেক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় তিনদিকে নদীবেষ্টিত প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম নজরপুরের টেকের শতশত বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে ভ্রমন পিপাসুদের পদভারে মুখরিত স্থানটি বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় চরাঞ্চলের বাসিন্দারা জানান, জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে নদীর তীরবর্তী জমিগুলোসহ নজরপুরের মিনি কক্সবাজার খ্যাত টেকটি নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। শত বৎসরের ঐতিহ্যবাহী এ টেকটিকে ভাঙ্গনের কবল থেকে থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।

নজরপুরের স্থায়ী বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, ‘৩ কিলোমিটার বিস্তৃত মনোমুগ্ধকর চরের ৪টি সেট ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যেটুকু আছে সেটুকু ও যদি চলে যায় তাহলে মরা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় থাকবে না’।

আব্দুল করিম নামে অপর এক এলকাবাসী বলেন, ‘সাড়ে তিনমাইল বিস্তৃত চরের দেড় মাইল ভেঙ্গে গেছে। এমতাবস্থায় সরকার যদি এখানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে দেয় তাহলে আমাদের চলতে ফিরতে সুবিধা হবে।’ মোঃ আবুল হোসেন নামে আরেক জন গ্রামবাসী বলেন, ‘আমাদের অধিকাংশ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যেটুকু রয়েছে সেটুকুতে সরকার যদি বেড়িবাঁধের ব্যাবস্থা করে দেয় তাহলে ছেলেমেয়েদের নিয়ে কোনরকম চলে যেতে পারব’।

এসময় উপস্থিত আব্দুস সামাদ নামে আরেক গ্রামবাসী বলেন, ‘আমাদের সবকিছুই নদী কেড়ে নিয়েছে। আপনাদের মাধ্যমে অবশিষ্ট জমি রক্ষার্থে সরকারের নিকট বেড়িবাঁধের আবেদন করছি’।

এ ব্যাপারে নরসিংদী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, মেঘনা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রামের বেড়িবাঁধ দৃশ্যমান হয়েছে। ওইসব বেড়িবাঁধে মেঘনার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। এছাড়া ও নজরপুরের ‘মিনি কক্সবাজার’ খ্যাত এলাকাটির বিষয়ে অবগত রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক ইকো পার্ক করার বিষয়ে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এ বর্ষার শুরুতে যে সকল এলাকা ভাঙনের কবলে পড়ছে সেখানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী।

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ