জাকারিয়া হোসাইন
নরসিংদীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে শহরের চৌয়ালা শিল্প এলাকার আন্দোলনরত ২০ হাজার শ্রমিক তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে
কাজে ফিরেছে। রবিবার (১৮ আগস্ট) সকালে সেনাবাহিনীর ২৮ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন মো.রাকিবুল আলম’র হস্তক্ষেপে টেক্সটাইল শিল্প মালিক সমিতি ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপস্থিতিতে সভায় দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেয় শ্রমিকরা। পরে সন্ধ্যায় ওই এলাকার ৩০০ ফ্যাক্টরির প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক কাজে যোগ দেন।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে চৌয়ালায় ইয়ামিনের একটি টেক্সটাইলে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে এক শ্রমিক মারা যায়। এরপর থেকে শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছিলো। তাদের দাবিগুলো মধ্যে রয়েছে, প্রতিটি কারখানায় অটো সার্কিট ব্রেকার স্থাপন, দুর্ঘটনায় আহত হলে চিকিৎসার সু-ব্যবস্থা, আন্দোলনকারী শ্রমিকদের উপর অহেতুক নির্যাতন মামলা বা হয়রানি বন্ধ করা, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য একটি ক্লিনিক ও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা, সপ্তাহে একদিন শুক্রবার সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখা ও নির্ধারিত সময়ে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা।
শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে রবিবার সকালে নরসিংদীর চৌয়ালা শিল্প এলাকায় টেক্সটাইল শিল্প মালিক সমিতি ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপস্থিতিতে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নরসিংদীতে মোতায়েনরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৮ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন মো. রাকিবুল আলম, নরসিংদী জেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজ্জাদ পারভেজ এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের মো. মাহফুজ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় টেক্সটাইল শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ শিল্প সমিতির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ছাড়াও গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।
পরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে অন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবিসমূহ মালিক সমিতি ও শ্রমিকদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হয়। এসময় শ্রমিকরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন । পরে সন্ধ্যায় শ্রমিকরা তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদান করে ।
চৌয়ালা শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নান্নু আলী খান বলেন, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে শ্রমিকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছে। সন্ধ্যায় তারা নিজ নিজ ফ্যাক্টরিতে কাজে যোগ দিয়েছে। বর্তমানে সকল ফ্যাক্টরি চালু রয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, নরসিংদীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই ইউনিট দেশ বিনির্মাণে অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের কাজ করে যাচ্ছে। যার মধ্যে সংখ্যালঘু এলাকা ও মন্দির, সকল থানা, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই সমূহ) এবং সাধারণ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও নরসিংদীতে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসন থেকে শুরু করে যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনাবাহিনীর এই ইউনিট অগ্রগণ্য ভূমিকা রাখছে।