আবদুল জলিল মিয়া
করোনার সংক্রমণ রোধে সারাদেশে অব্যাহত লকডাউনে ফলে বেচাকেনা না থাকায় লোকশানের মুখে প্রাচ্যের ম্যানচেষ্টার খ্যাত দেশের অন্যতম পাইকারি কাপড়ের হাট নরসিংদীর শেখেরচর বাবুরহাটের ব্যসায়ীরা। আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বেচাকেনাসহ কোটি কোটি টাকা লেনদেন হওয়ার কথা থাকলেও লকডাউনে মার্কেটগুলো বন্ধ থাকায় দেশের দূরদূরান্ত থেকে আসছে না পাইকাররা। এতে চরম লোকশান গুনছেন বাবুরহাটের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা।
ঐতিহ্যবাহী পাইকারি কাপড়ের অন্যতম বাজার শেখেরচর বাবুরহাট দেশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ দেশীয় কাপড়ের চাহিদা পূরণ করে। প্রতি সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আসেন কাপড়ের পাইকারি কেনাবেচা করতে। প্রতি বছর কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার কাপড় বেচাকেনা হয়ে থাকে এই হাটে। বুধবার বিকেল থেকে বসতে থাকা বৃহস্পতি ও শুক্রবার পুরোদমে চলে এই হাট। শনিবারও মোটামুটি ক্রেতা সমাগম ঘটে বাবুরহাটে। রবিবার সকালে এসে হাট ভাঙ্গতে শুরু করে। সপ্তাহে ৩ দিন ব্যাপী চলা এই হাটে রমজানের ঈদের চেয়ে কোরবানির ঈদে ক্রেতা সমাগম অনেকটা কম থাকলেও তা একেবারে নেহায়েত কম নয়। কিন্তু সারাদেশের মত চলমান অব্যাহত লকডাউনে বন্ধ রয়েছে বাবুরহাট। ঝাঁকজমক পূর্ন দেশের এই পাইকারি কাপড়ের বাজারটি এখন নিরব-নিস্তব্ধ। হচ্ছেনা কোন লেনদেনসহ বেচাকেনা । এ অবস্থা লোকসানের মুখে পড়ছে হাটের ব্যবসায়ীরা।
করোনার কারনে বার বার লকডাউনে ব্যবসায়ীসহ এর সাথে সংশ্লিষ্টরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। আয়ের উৎস হারিয়েছে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫ হাজার পাইকারি কাপড়ের দোকান মালিক এবং তার সাথে যুক্ত ১৫ হাজারেরও অধিক মানুষ।
অব্যাহত লকডাউনে ক্রমাগত লোকশানের মুখে পড়ে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে দেউলিয়া হয়ে গেছে। বিগত সময়ে লকডাউনে সীমিত পরিসরে দোকানপাট খুলে দিলেও। বর্তমান সময়ে লকডাউনে দোকানপাট ছিল বন্ধ।
ব্যবসায়ীরা বলেন, কিছু দিন পর পর লকডাউন আমাদের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছর লকডাউনের যে ক্ষতি হয়ে ছিলো এবার ঈদে তা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু তা হলো না। লকডাউনে পাইকাররা বাজারে আসতে পারছেনা। গোডাউনে পর্যাপ্ত মালামাল মজুদ রয়েছে। এগুলো বিক্রি না করতে পারলে বিশাল ক্ষতির মুখে পরতে হবে আমাদের এবং অনলাইনে বেচাকেনায় পাইকাররা আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
এবিষয়ে নরসিংদী চেম্বার অর্ব কমাসের সভাপতি আলী হোসেন শিশির বলেন, সরকারি প্রণোদনা চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে, করোনা ও লকডাউনের ধাক্কা কাটিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়াবে ম্যানচেস্টার খ্যাত শেখেরচর বাবুরহাটের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসায়ীরা।