মনিরুজ্জামান মনির
নরসিংদীতে প্রয়াত ভাসুর মৃত ফজলুর রহমানের স্ত্রী মোসাঃফরিদা বেগম,-সন্তান মাহমুদুল হাসান রানা ও নাইমুর রহমান রাফির বিরুদ্ধে মৃত আতাউর রহমান মন্টুর স্ত্রী কাজী রুনার নরসিংদীর ব্রাক্ষন্দীস্থ ০২ শতাংশ জমি অবৈধ ভাবে আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে ভুক্তভোগী কাজী রুনা গত ০৯–০৫-২০২১ নরসিংদী পৌর বিরোধ মীমাংসা বোর্ডে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু বিবাদীগণ পৌর বিরোধ মীমাংসা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অমান্য করে অদ্যাবধি পর্যন্ত বাদিনীর প্রাপ্য বুঝিয়ে না দিয়ে তার জমিতে জোরপূর্বক ইমারত নির্মাণ করে বিবাদিগণ বহাল তবিয়তে বসবাস করছেন বলে জানান ভুক্তভোগী কাজী রুনা।
নরসিংদী পৌর মীমাংসা বোর্ডের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়,বিবাদীগণ বাদীর স্বামীর ভাইয়ের স্ত্রী পুত্রগণ বিগত ৫-১১-২০১৯ ইং তারিখে সম্পত্তি সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে স্থানীয়ভাবে বাদীর স্বামীর ব্রাক্ষন্দীস্থ বাড়ির ০২ শতাংশ জমি বুঝাইয়া দেওয়ার শর্তে আপোষ মীমাংসা হয়। মীমাংসার পর আপোষনামার উল্লেখিত শর্ত উভয় পক্ষ মেনে নেয়।
এমতাবস্থায় বাদীর স্বামী অসুস্থ থাকা অবস্থায় বাদীকে নিঃসন্তান রেখে মৃত্যুবরণ করে। এমতাবস্থায় বিবাদীগণ ৫-১১-২০১৯ ইং এর আপোষ মীমাংসার শর্ত ভঙ্গ করে বাদিনী নিঃসন্তান হওয়ায় তার সম্পত্তি বুঝিয়ে না দিয়ে তাকে হয়রানি করতে থাকে। পরবর্তীতে বাদিনী পুনরায় পৌর মীমাংসা বোর্ডের স্মরনাপন্ন হলে ৩০-০৬-২০২১ ইং তারিখে বিবাদীদের ১ম এবং ০৮-০৯-২১ ইং তারিখে ২য় নোটিশ পাঠানো হয়।২য় নোটিশের পর বিবাদীগণ হাজির হয়ে এক সপ্তাহের সময় চাইলে তা মঞ্জুর করা হয়।
পরবর্তীতে ১৫-০৯-২১ ইং তারিখে পরবর্তী তারিখ দেওয়া হলে সেই তারিখে উভয় পক্ষের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই পূর্বক শুনানি শেষে বিবাদীগণ বাদিনীকে ৩,৪৫০০০/(তিন লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার) টাকা প্রদান করার নির্দেশ দেয় পৌর মীমাংসা বোর্ডের সদস্যরা। সেইসাথে টাকা প্রদান করার পূর্ব পর্যন্ত বাড়ির সকল প্রকার নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় পৌর মীমাংসা বোর্ড।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো এখনো পর্যন্ত বাদিনীকে কোন টাকা পয়সা না দিয়ে পৌর মীমাংসা বোর্ডকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে সেখানে আয়েশে বসবাস করছে বিবাদীগণ।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী কাজী রুনা অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আমি আমার স্বামীকে সুস্থ করে তুলতে সকল প্রকার চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছি। তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমার স্বামির ক্রয়কৃত বাড়িঘর,আমার গহনা ও পৈত্রিক সম্পত্তি সকল কিছু বিক্রি করে ফেলেছি।
সর্বশেষ তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমার ভাসুরের স্ত্রী ও সন্তানদের স্মরণাপন্ন হয়েছি কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা পাইনি। বরং আমার স্বামীর অসুস্থতার সুযোগে তারা ব্রাক্ষন্দী থেকে জমি দেওয়ার কথা বলে আমার স্বামীর গ্রামের বাড়ির সকল সম্পত্তি কৌশলে লিখে নিয়েছে। বিনিময়ে ব্রাক্ষন্দী থেকে যে জমি দেওয়ার কথা ছিল তাও দেয়নি। আমি আমার স্বামীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু অবশেষে নিয়তির কাছে হার মেনে আমার স্বামী পরপারে পাড়ি জমান। এনজিওর টাকা দিতে না পারায় আমার নামে মামলা হয়েছে ।
বর্তমানে আমি বিভিন্ন এনজিও’র একাধিক মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে ফেরারী জীবন যাপন করছি।
তাদের কাছে আমার সমস্ত সমস্যার কথা খুলে বলার পরও তাদের এতটুকু মায়া হয়নি আমার জন্য।
তাদের বিরুদ্ধে পৌর মীমাংসা বোর্ডকে অবগত করেও কোন লাভ হয়নি। পৌর মীমাংসা বোর্ডের দেওয়া রায়ের টাকা গুলো পেলে আমি অন্তত আমার ঋনের বোঝাটা হালকা করতে পারব।আমি স্বামি হারা সহায়সম্বলহীন এক হতভাগা নারী। পুলিশের ভয়ে আমাকে সারাক্ষন পালিয়ে বেড়াতে হয়। আমার স্বামির সকল সম্পদ গ্রাস করে ও তারা আমার সাথে এতটুকু সহায়তার হাত বাড়ায়নি!
আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমার সাথে ঘটে যাওয়া এ অমানবিক আচরণের বিচার চাই।
এব্যাপারে জানতে বিবাদীদের বাড়িতে গেলে তারা সবকিছু অস্বীকার করে বলেন,পৌর মীমাংসা বোর্ড যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা আমরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাক্ষান করেছি। তাছাড়া আমার দেবরের চিকিৎসার জন্য আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছি।