আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নরসিংদীতে ইটভাটায় মাটি দিতে নদী পাড়ে চলছে মাটি কাটাঁর মহোৎসব

আশিকুর রহমান

বছরের ১২ মাসের মধ্যে পৌষ-মাঘ-ফালগুন এ তিন মাস ইটভাটা ব্যবসায়ীদের মৌসুম সময়। এসময়ের মধ্যে সাধারণত আমাদের দেশে বৃষ্টিপাত হয়না। তাই ইটভাটার মালিকেরা পুরানো সেই পদ্ধতিতে ইটভাটা গুলোতে এ তিন মাস ইট তৈরীর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকে। বাংলাদেশ সরকার পরিবেশ সুরক্ষার জন্য ইটভাটার মালিকদের বারবার সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ মেনে চলার তাগিদ দেওয়া শর্তেও তা তারা আমলে না নিয়ে সরকারের বিধিনিষেধকে পাশ কাটিয়ে সেই পুরানো পদ্ধতিতে চলছে ইটভাটায় ইট তৈরীর কাজ।

নরসিংদী জেলায় নতুন পুরাতন ছোট বড় মিলিয়ে অসংখ্য ইটভাটা রয়েছে। ইটা তৈরীর প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে মাটি। আর এ মাটি সংগ্রহের জন্য জেলার সর্বত্রেই চলছে মাটিকাটার হিড়িক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়নের তেলিয়া, ইটাখোলা-চরসিন্দুর রোড়ের ঝালকাটা ব্রীজ, পুটিয়া, দুলালপুর, বাঘাবো ইউনিয়ন, মনোহরদী উপজেলার হাতিরদিয়া, একদুরিয়া, রামপুর ইউনিয়ন, বেলাবো উপজেলা, রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ, চরসুবুদ্ধি, চড়আড়ালিয়া ইউনিয়ন, নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী, মহিষাশুড়া, করিমপুর ইউনিয়নের শ্রীনগর, নজরপুর ইউনিয়নের নজরপুর, হাজীপুর ইউনিয়নের চরহাজীপুর, পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের চলনা, ডাঙ্গা সহ আশপাশ এলাকার নদীর তীরবর্তী ও ফসলি জমি হায়ডোলিক ব্রেকো যন্ত্রের মাধ্যমে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে নদী রক্ষা বাঁধ, নদীর তীরবর্তী ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায় যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গত দুই এক বছর পূর্বে জেলার বিভিন্ন নদীগুলো ড্রেজিং করে। নদীর ড্রেজিং ও খননকালীন সময়ে ওই মাটি দিয়ে নদীর দুই পাশে রেখে বাঁধ তৈরি করা। এ বাঁধ তৈরি হওয়ার ফলে বর্ষাকালে ফসলি জমি ও ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পায়।

পলাশ উপজেলার চলনা গ্রামের নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘সরকার আমাদের জন্য আমাদের ফসলি জমি বর্ষাকালের পানি থেকে রক্ষা করার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করে নদী খনন করে নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করলো আর এলাকার কিছু স্বার্থনেষী মহল টাকার বিনিময়ে ইটভাটা গুলোতে মাটি বিক্রি করছে দেদাচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, এলাকার ভূমি খেকো কিছু চিহ্নিত লোক রাজনৈতিক নেতার পরিচয় দিয়ে এবং প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে তারা গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে বোকা বানিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে এসব অপরাধমূলক কাজ করছে। শুধু তাই নয় মাটি বহনকারী কৃষিকাজে ব্যবহৃত ইছারমাথা খ্যাত টাক্টর অবৈধভাবে মানুষের ফসলি জমিতে প্রবেশ করে কৃষকের ফসলি জমি নষ্ট করছে এবং রাস্তা-ঘাট ভাঙ্গছে।

এব্যাপারে ঘটনাস্থল চরসিন্দুর ইউনিয়নের চলনা গ্রামে অবৈধ মাটি বিক্রেতা লিখনের সাথে কথা বললে তিনি প্রতিবেদককে জানান যে, আমার মাটি বিক্রি করার অনুমতি আছে, কাগজও আছে। অনুমতি বা কাগজ কোথায় থেকে পেলেন বা কে দিয়েছে তা জানাতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ