আজ ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জয়নগরবাসীর দাবীর মুখে আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন নাদিম

মাজহারুল ইসলাম রাসেল

শিবপুরের জয়নগরবাসীর একান্ত ইচ্ছায় ও দাবী মুখে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান পরিষদের চেয়ারম্যান নাদিম সরকার। দ্বিতীয় বার নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আওয়ামী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে নৌকা পেলে আবারও স্থানীয় কুচক্রী মানুষের ষড়যন্ত্রের মুখে পড়েন তিনি। তার সেই দলীয় মনোনয়ন ফিরিয়ে নিয়ে অন্য একজনের হাতে নৌকা তুলে দেওয়া হয়। জয়নগরের জনপ্রিয় তরুন এই চেয়ারম্যানের কাছ থেকে নৌকা ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি ইউনিয়নবাসী ও তার কর্মী সমর্থকরা। পুরো ইউনিয়ন জুড়ে যেন নেমে আসে স্তব্দতা। পরবর্তীতে নাদিম সরকার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ইউনিয়নজুড়ে দাবী ওঠে। বার বার ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়া নাদিম সরকারের বিরুদ্ধে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ দাবী তুলে।নিজ এলাকার সাধারণ মানুষের দাবী ও তাদের ইচ্ছার প্রাধান্য দিতেই এই তরুণ চেয়ারম্যান অনেকটা বাধ্য হয়েই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করে।

পরবর্তীতে যাচাই-বাছাইয়ে তার সেই মনোনয়নপত্র বৈধ বলে বিবেচিত হয়। গত রবিবার জয়নগরবাসীর পছন্দের প্রতীক (যে আনারস প্রতিক নিয়ে নাদিম সরকারের পিতা মরহুম মজিবুর রহমান সরকার বার বার নির্বাচিত হয়েছিলেন)সেই প্রতিক বরাদ্ধ পেয়ে তাদের আশা-আকাংখার প্রতিফলন ঘটেছে।

ইউনিয়নবাসী বলেন, আগামী ৫ জানুয়ারী পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে জয়নগরে সাদা রঙের সেই ব্যালট পেপারে আনারস প্রতীকে তাদের রায় দিয়ে নাদিম সরকারকে চেয়ারম্যান হিসেবে বিপুল ভোটে জয়ী করে ষড়যন্ত্রকারীদের দাঁত ভাঙা জবাব দিতে ভুল করবেনা ইউনিয়নের সাধারণ ভোটাররা। সে সাথে বুঝিয়ে দিতে চায় নৌকা মানেই শেষ কথা নয়, নৌকা পেলে নির্বাচনে জয়ী হওয়া নয়। ভোটের মালিক তারা ভোটের মাধ্যমেই জয় পরাজয় নিশ্চিত হয়। এলাকার সাধারণ ভোটার চাইলে যে কাউকে তাদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করতে পারে। এই জন্য প্রয়োজন একজন গ্রহণযোগ্য প্রার্থী। আনারস প্রতীকের নতুন সরকারে তেমনি সর্বজন স্বীকৃত গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তি।

জয়নগর ইউনিয়নের ধনাইয়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী সরকার পরিবারের সন্তান এই নাদিম সরকার। নাদিম সরকারের দাদা আনছর আলী সরকার ছিলেন ন্যায়বিচারের একজন মূর্ত প্রতীক। এই ন্যায় বিচারের জন্য শুধু জয়নগর নয় শিবপুরসহ পুরো নরসিংদী জেলা জুড়ে সুখ্যাতি ছিল তার।তিনি তার জীবদ্দশায় ইউপি সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান পদে সততা, দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে বিভিন্ন পদে দীর্ঘ ৫২ বছর নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

চেয়ারম্যান নাদিম সরকারের বাবা মজিবুর রহমান সরকার (মঞ্জিল চেয়ারম্যান) জয়নগর ইউনিয়নবাসীর রায় নিয়ে পরপর তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিন দফায় তিনি প্রায় সাড়ে ১৮ বছর সততা, ন্যায়-নিষ্ঠা সাথে অত্যন্ত সুনামের সহিত জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে গেছে।যার পুরস্কার স্বরুপ মানব সেবায় তিনি স্বর্ন পদক পেয়েছেন তিনি তার যোগ্যতা দিয়ে জয়নগরবাসীর মনে স্থান করে নিয়ে ছিলেন। তাদের কাছে হয়ে উঠে ছিলেন ব্যাপক জনপ্রিয় একজন চেয়ারম্যান। তাইতো তিনি জয়নগরবাসীর কাছে ছিলেন প্রিয় মঞ্জিল চেয়ারম্যান। আবার কারো কাছে ছিলেন প্রিয় মঞ্জিল ভাই। যার প্রমান মেলে, ২০১১ সালে ২ আগস্ট তিনি মৃত্যূবরণ করলে সেদিন কেঁদেছিলেন পুরো জয়নগরবাসী, ফেলে ছিলেন তাদের চোখের জল। দাদা ও পিতার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নাদিম সরকার গত সাড়ে পাঁচ বছর সততা এবং ন্যায়-নিষ্ঠায় জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বংশ পরম্পরায় এ পরিবারের সদস্যরা প্রায় ৭৬ বছর জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন।

ইতোমধ্যে পিতা মঞ্জিল চেয়ারম্যানের ন্যায় নাদিম সরকারও এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। যার প্রমাণ মেলে গত ১৯ ডিসেম্বর জয়নগর মাদ্রাসা সংলগ্ন নাদিম সরকারের নির্বাচনি অফিস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি লোকেলোকারণ্য হয়ে জনসভায় রূপ নেয়। সেদিন সেখানে উপস্থিত সবার মুখে একটাই কথা ‘আমরা মার্কা নয় ব্যক্তিকে ভোট দিব, আর সেই ভোটটা নাদিম সরকার কে ই দিব।’ বিগত ৫ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে এতটুকু অবহেলা করেনি। তিনি শুধু দায়িত্ব বোধের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এলাকাবাসী যে কোন বিপদে ছুটে গেছেন তাদের পাশে। মানুষের দু:সময়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে নিজে তাদের পরম বন্ধু হিসেবে তুলে ধরেছেন।

বিগত করোনাকালীন সময়ে সমাজের অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি যখন তাদের নিজেদেরকে নিরাপদ রাখতে চার দেয়ালে মাঝে বন্দি রেখেছে তখন অভুক্ত, অসহায়, কর্মহীন দরিদ্র জয়নগরবাসীর কাছে ছুটে গেছে এই নাদিম চেয়ারম্যান। সরকারী সাহায্যের পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে তার গাড়ীতে খাদ্যসামগ্রী ভরে নিয়ে তা অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দিয়েছে। দু:সময়ে এতোটুকু খাদ্যে যোগানদাতা এই মানুষটিকে আজও স্মরণ করে জয়নগরবাসী। আর তাইতো নিয়ে দু:সময়ে এই পরম বন্ধুটি তাদের নিজেদের রায় দিতে মুখিয়ে রয়েছে জয়নগরের সেই অসহায় সাধারণ মানুষগুলো। শুধু অপেক্ষা ভোটের।

এদিকে নাদিম চেয়ারম্যানের এই জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাণ্বিত হয়ে শুরু থেকেই একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। নামে-বেনামে মামলা দিয়ে তার জনপ্রিতায় কালি লেপনের ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে আসছে। মামলা দিয়েও ঘায়েল করতে না পেরে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে তার মৎস খামারের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে নিরীহ মাছগুলোকে মেরে। এতে হয়তো নাদিম চেয়ারম্যানের কুটি টাকার বেশী ক্ষতি করতে পেরেছে কিন্তু তার জনপ্রিয়তার এতোটুকু আছড় কাটতে পারেনি। ষড়যন্ত্রকারীরা শেষ আঘাত হানে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন বোর্ড নাদিম সরকারকে নৌকার মাঝি করে হাতে নৌকা তুলে দিলে বোর্ডে কাছে তাকে হত্যা মামলার ফেরারি আসামী,ইয়াবা কারবারি, সন্ত্রাস হিসেবে উপস্থাপন করে। পরে মনোনয়ন আইনি জটিলতা এড়াতে এবং প্রার্থীর মনোনয়নপত্র অবৈধ না হয়ে যায় এই কারণে মনোনয়ন বোর্ড নাদিম সরকারের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়ে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন করে। নাদিম সরকারের কাছ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি ইউনিয়নবাসি। তাইতো পুরো ইউনিয়ন জুড়ে নারী-পুরুষ সকল ভোটার সহ সর্বস্তরের জনগন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য দাবী তুলে।ইউনিয়নবাসী ইচ্ছা ও মতামতকে মূল্যদিতে এবং তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে অনেকটা অনিচ্ছা সত্বে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি জয়নগরের সাধারণ মানুষের প্রার্থী হয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাই জয়নগরের প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে আনারসের জয়গান করতে শুনা গেছে।

ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের-কফিল উদ্দিন খন্দকার বলেন, ভোট আসলেই অনেক নতুন নতুন মুখ দেখা যায়। কিন্তু জয়নগরের মানুষ যখন কর্মহীন বেকার হয়ে ঘরে অনাহারে দিন কাটিয়েছে তখন এই নতুন নতুন মুখগুলো কোথায় ছিলো??? কই কাউকে তো সেই সময় দেখা যায়নি। করোনার এই মহামারি সময়ে সব কিছুকে উপেক্ষা করে আমাদের কাছে ছুটে এসেছিলেন একমাত্র এই নাদিম চেয়ারম্যানই, অন্য কেউ নয়। তাই মার্কা নয় আমরা আমাদের সেই দু:সময়ের বন্ধু নাদিম চেয়ারম্যানকেই আমাদের ভোট দিয়ে আবারও জয়নগরের চেয়ারম্যান নির্বাচিত। করতে চাই।

নৌকাঘাটা গ্রামের ঠাকুর দাস বলেন, ‘নাদিম চেয়ারম্যান তার বাবা মঞ্জিল চেয়ারম্যানের মতই নম্র-ভদ্র ও বিনয়ী। আমাদের যে কোন বিপদে তাকে ডাকা মাত্র এসে হাজির হয়। তাই আমি বলবো আমরা মার্কা চিনিনা শুধু নাদিম চেয়ারম্যানকেই চিনি। সে যে মার্কা নিয়েই ইলেক্শান করুক না কেন আমরা তাকে আবারও চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করতে সেই মার্কায়ই ভোট দিব।’

ছোটাবন্দ গ্রামের আব্দুর রহিম বলেন, আমরা গরিব মানুষ অতো কিছু বুঝি না। শুধু এইডা বলতে পারি যিনি চেয়ারম্যান হলে এলাকার উন্নয়ন হবে। আমাদের সুখে-দু:খে যাকে সবসময় কাছে পাই তাকেই আমরা ভোট দিব। যদি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হয় এবং সাধারণ মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের নিজেদের ভোট নিজেরা দিতে পারে তবে নাদিম চেয়ারম্যান জয়ী হবেনই ইনশাল্লা।

আষ্টআনী গ্রামের রজব আলী বলেন, নাদিম চেয়ারম্যানের দাদা থেকে শুরু করে নাদিম চেয়ারম্যান পর্যন্ত এই তিনটি প্রজন্ম তারা জয়নগরবাসী সেবা করে গেছেন। বিচার-বিশ্লেষন করলে আমি বলবো আমরা কতটুকু দিতে পেরেছি তাদেরকে। এই সরকার পরিবারের আনছর আলী সরকার ও মজিবুর রহমান সরকার এলাকাবাসী সর্বদা নিবেদিত প্রাণ ছিল।বর্তমানে নাদিম সরকার ও তাহাদের দেখানো পথ অনুসরন করে জনগনের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন। তাই আমি বলবো এবার প্রতিদানের সময় এসেছে। সময় এসেছে ষড়যন্ত্রকারীদের জবাব দেওয়ার। আর এই জবাবটা আমাদের হাতেই, তাই আমরা ভোটের মাধ্যমে তাদের ওইসকল ষড়যন্ত্রকারীদের। উপযুক্ত জবাব দিব।
জয়নগর ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের প্রার্থী নাদিম সরকার গত আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়নগরবাসী ভোটে নির্বাচিত হয়। তিনি স্বচ্ছতার সাথে পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করে গেছেও অত্যান্ত সততা ও নিষ্টার সাথে এলাকার সালিশ দরবার করেছেন। শিবপুর উপজেলায় তিনিই একমাত্র চেয়ারম্যান যিনি জনগনের কাছে জবাবদিহিতায় বিশ্বাসী তাইতো তার আমালে সরকারের কি বকি উন্নয়ন কাজ সাধিত হয়েছে তার একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন করে তা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার এই স্বচ্ছতার মূল্যায়ন জয়নগরবাসী করবে বলে তিনি দাবী করেন।

নাদিম সরকার বলেন, মানুষ সামাজিক জীব। আমি এর বাহিরে নই। জয়নগর ইউনিয়নবাসীর ঐকান্তিক ইচ্ছায় আমি নির্বাচনে অংশ নিয়ে আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছি। আমি বরাবরই এলাকাবাসীর মতামতের প্রাধান্য দিয়ে এসেছি। তাদের মতমতের ভিত্তিতে ইউনিয়নবাসী সাথে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। তিনি বলেন, আপনারা জানেন আমি ২০১৬ হতে ২০২১ এই পাঁচটি বছর অত্যন্ত সানামের সহিত জয়নগর ইউনিয়নের জনগগনের সেবক হয়ে চেয়ারম্যান হিসবে দ্বায়িত্ব পালন করেছি।তাই আমি আশাবাদী আগামী ০৫ জানুয়ারী ২০২২ইং তারিখ জয়নগরের সর্বস্তরের সন্মানিত ভোটার গন আমাকে ভোট দিয়ে পূনরায় জয়যুক্ত করবেন। নির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারলে জয়নগর ইউনিয়নের অসমাপ্ত উন্নয়নমুলক কাজগুলো সমাপ্ত করবো এবং এই ইউনিয়নকে একটি সম্পূর্ণ মাদক মুক্ত চাঁদাবাজমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, দুর্ণীতিমুক্ত ডিজিটাল ইউনিয়ন উপহার দেওয়ার লক্ষে কাজ করে যাব ইনশাআল্লাহ।

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ