আজ ৪ঠা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সত্য ও ন্যয়ের পক্ষে রায় দিয়ে আবারো নাদিম সরকারকে নির্বাচিত করলো জয়নগরবাসী

মানাবন্ড রায়

ষড়যন্ত্রকারীদের মুখে ছাই দিয়ে সত্য ও ন্যয়ের পক্ষে রায় দিয়ে দু:সময়ের বন্ধু নাদিম সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করে তার গলায় জয়ের মালা পড়িয়ে দিয়েছে শিবপুরের জয়নগরবাসী। গত বুধবার (৫ জানুয়ারি) পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আনারস প্রতীকে তাদের রায় দিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে দ্বিতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান পদে নাদিম সরকারকে নির্বাচিত করেছেন ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ। এই রায়ের ফলে ষড়যন্ত্রকারীদের উচিত জবাব দিতে পেরেছে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।

নাদিম সরকারের বিজয়ে নরসিংদীর শিবপৃর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়ে। অনেকে আবার এই আনন্দে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে। অশ্রু সজল হয় তাদের দুই চোখ।

নির্বাচন শেষে সকল কেন্দ্রের প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে রাতে বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার ও নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার জাকির মাহমুদ। ফলাফলে জয়নগর ইউনিয়নবাসী আনারস প্রতীকে পক্ষে ৯ হাজার ৮২০ ভোট দিয়ে নাদিম সরকারকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মোঃ মুক্তার হোসেন ভূঁইয়া নৌকা প্রতীকে পান ৪ হাজার ৭৭৭ ভোট। প্রাপ্ত ভোটে আনরস প্রতীকে নাদিম সরকার প্রায় দ্বিগুণ ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়

নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর নৌকাঘাটা এলাকার বাউল আবদুল রশিদ, আনন্দে আপ্লুত হয় তার চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলে ওঠেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীদের উচিত জবাব দিতে পেরেছি আমরা, পেরেছি সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করতে।’

জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন, গাজী ইমরান হোসেন বাচ্চু (মোটরসাইকেল), নাজমুল হক (চশমা), নাদিম সরকার (আনারস) মোঃ মুক্তার হোসেন ভূঁইয়া (নৌকা), মোঃ রাসেল মিয়া (টেবিল ফ্যান) মো. হারুনশা (ঘোড়া) ও মোঃ হারুনুর রশিদ (হাতপাখা)।

জয়নগর ইউনিয়ন মোট ভোটার সংখ্যা ২৫ হাজার ৩৪৩ তদ্মধ্যে ১৮ হাজার ১৪৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৮৮৪টি ভোট বৈধ হিসেবে গন্য হয় এবং ২৫৯টি বাতিল করা হয়।

ফলাফল ঘোষণার পর অভিব্যপ্তি প্রকাশ করতে গিয়ে নাদিম সরকার জয়নগরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেন, আজকের এ বিজয় আমার নয়, এ বিজয় জয়নগরবাসীর। এ বিজয় জয়নগরের সর্বস্তরের জনগণের। ভোটের মাধ্যমে জয়নগরবাসী আমাকে পূণরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে ঋণের জালে আবদ্ধ করলেন। তাদের এই ঋণ আমি কোনদিন শোধ করতে পারব না। তবে জয়নগরবাসীর উদ্দেশ্যে এতটুকু বলতে পারি আগামী পাঁচ বছর জয়নগর ইউনিয়নের এবং জয়নগরবাসীর উন্নয়নে কাজ করে যাব।

উল্লেখ্য নাদিম সরকার শিবপুরের জয়নগর ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীক পেলেও কতিপয় ষড়যন্ত্রকারীরা দলীয় হাই কমান্ডের কাছে তাকে ওয়ারেন্ট ভুক্ত পালাতক আসামীসহ তার মাদক ও অন্ত্র আইনে বিভিন্ন মামলা রয়েছে এমন কিছু ভুয়া কাগজপত্র উপস্থাপন করলে মনোনয়ন ঘোষণার কয়েক ঘন্টা পর তা বাতিল করে। পরবর্তীতে মোক্তার হোসেনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়।

এদিকে নাদিম সরকারের কাছ থেকে দলীয় প্রতীক ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি জয়নগরবাসী। তারা ষড়যন্ত্রকারীদের ভোটের মাধ্যমে জবাব দিবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করে নির্বাচনে প্রার্থী হতে নাদিম সরকারকে চাপ প্রয়োগ করেন। ইউনিয়নবাসীর একান্ত ইচ্ছা ও চাপের মুখে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতা করতে বাধ্য হয় নাদিম সরকার। অবশেষে জয়নগরবাসী তাদের দেওয়া কথা অনুযায়ী ভোটের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীদের উচিৎ জবাব দিয়ে প্রমাণ করলেন জয়নগরের মানুষ সব সময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে। তাদের কাছে ষড়যন্ত্রকারীদের কোন স্থান নেই।

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ