খাসখবর প্রতিবেদক
মোবাইলসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে বাংলাদেশের অনেকে অনলাইনে জুয়া (বেটিং) খেলছেন। অনেকে মোবাইল ফোনে বসাচ্ছেন জুয়ার আসর। এক জায়গার আসর মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। এসব জুয়ার বেশিরভাগ লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। নরসিংদী বিভিন্ন এলাকায় চলে এই জোয়ার রমরমা আসর।
অনলাইনে জুয়া খেলা নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং এর মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার ঠেকাতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। এখন থেকে জুয়ার টাকা যেসব মাধ্যমে লেনদেন হয়, যেমন মোবাইল ব্যাংকিং, সেগুলোতে নজরদারি করা হবে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়।
মাল্টার একটি অনলাইন গেমিং প্রতিষ্ঠানে ২০ জন বাংলাদেশির এমএফএসের (মোবাইল ব্যাংকিং) নিবন্ধিত হিসাব খুঁজে পায় বিএফআইইউ। এসব হিসাবে এক বছরে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা জমা হয় এবং প্রায় ২২ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করেই মোবাইল ফোনে জুয়া খেলতে পারছেন বাংলাদেশিরা। ফলে ঘরে বসেই সহজে জুয়ার আসরে যোগ দিচ্ছেন অনেকে। বাংলাদেশি জুয়াড়িদের কাছে অনলাইনে জুয়া বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছে। শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক বেটিং সাইটগুলোতেও বাংলাদেশি জুয়াড়িদের অংশগ্রহণ দিন দিন বাড়ছে।
রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা নরসিংদীতে ও চলছে এই অনলাইন জুয়ার রমরমা আসর। জেলার যুবসমাজ প্রতিদিন এই অনলাইন আসক্ত হয়ে নিজের উপার্জিত আয়সহ অন্যান্যদের কাছ থেকে কর্জ নিয়ে চালিয়ে যায় তাদের খেলা। অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রত্যেকটি গেমিং সাইটের নিজস্ব এজেন্ট এর মাধ্যমে টাকা লোড করে নিয়ে মোবাইল হাতে বসে পড়ে। ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে চালিয়ে যায় তাদের এই খেলা। প্রায় প্রতিদিন ক্রমাগত লোকসানের মুখে পড়ে জেলার যুবসমাজ বিপথগামী হচ্ছে।
জুয়া খেলার অর্থ লেনদেন হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। বিকাশ, রকেট, নগদসহ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুয়াডিরা অর্থ লেনদেন করে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
শুধু দেশি মুদ্রায় নয় অনেকে অনলাইনে বাজি ধরছেন ডলারেও। এজন্য ব্যবহার করা হচ্ছে ক্রেডিট কার্ড। ফলে জুয়ার অর্থ সরাসরি চলে যাচ্ছে দেশের বাইরে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (এমএফএস) প্রায় পাঁচ হাজার অবৈধ এজেন্ট রয়েছে। এসব এজেন্টের মাধ্যমে গত এক বছরে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এজেন্টরা হুন্ডির মাধ্যমে এই টাকা পাচার করেছে।