আজ ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মাধবদীতে থুতু ফেলায় এক কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা

হাফিজুর রহমান

নরসিংদীর মাধবদীতে পায়ের সামনে থুতু ফেলার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোবারক হোসেন ওরফে শাহ আলম (১৭)নামে এক কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (১২ নভেম্বর) মধ্যরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত‍্যূ হয়।

এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাধবদীর দক্ষিণ বিরামপুর এলাকার আওয়াল মোল্লার চায়ের দোকানের সামনে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িত ৪ কিশোরকে আটক করেছে মাধবদী থানা পুলিশ।

নিহত মোবারক নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। সে মাধবদী এসপি ইনস্টিটিউশন থেকে এবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

নিহত কিশোরের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মোবারক হোসেন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আওয়াল মোল্লার চায়ের দোকানের সামনে যাওয়ার পথে রাস্তায় থুতু ফেললে তা অপর এক কিশোরের পায়ের সামনে গিয়ে পড়ে। এতে ওই কিশোর ও তার সহযোগী কিশোর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে সেখান থেকে মোবারক চলে যায়। এরই জের ধরে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই কিশোরসহ আরও ১০ থেকে ১২ জন কিশোর একই চায়ের দোকানের সামনে ওত পেতে থাকে। এসময় দোকানটির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মোবারকের ওপর অতর্কিত ঝাপিয়ে পড়ে তারা। একপর্যায়ে তারা চাপাতি, ছুরি ও দা দিয়ে মোবারককে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। আশপাশের লোকজনের সামনেই এ ঘটনা ঘটে, তবে এসময় তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ফলে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের ফলে এক পর্যায়ে মোবারক মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারী কিশোরেরা তাকে রেখে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন এসে মোবারককে উদ্ধার করে মাধবদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার বেগতিক দেখে কর্তব‍্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে ভর্তি করার পর দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত কিশোরের চাচাতো ভাই সেলিম হোসেন বলেন, ‘যারা আমার ভাইকে এত লোকের সামনে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তারা প্রত্যেকেই স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তাদের সবার বয়স ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। পায়ের সামনে থুতু পড়ার মতো একটি তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে যারা তাকে হত্যা করেছে, আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।

এ ব‍্যাপারে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকীবুজ্জামান ঘটনার সত‍্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি যাচাই-বাছাই শেষে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত ৪ জনকে আটক করেছে। মামলা হওয়ার পর তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ