নিজস্ব প্রতিবেদক
আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিত নরসিংদীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চল আলোকবালি ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে খুন, মারামারি, টেটাযুদ্ধ, ও বন্দুকযুদ্ধ এখানকার নিত্যদিনের ঘটনা। কয়েকদিন পর পর এই জনপদকে অস্ত্রের জোগান দিয়ে যারা উত্তপ্ত করে তুলেন সম্প্রতি ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়া এমনই একটি ফোনালাপে তাদের পরিচয় মেলেছে। তারা দু’জন আলোকবালী ইউনিয়নের যুবলীগ কর্মী । ভাইরাল হওয়া ফোন আলাপটি আজ ‘টক অব দ্যা নরসিংদী।’ এই ফোনালাটি ভাইরাল হবার পর যে কোন সময় সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফোন দাতা মো: মিটল মিয়া আলোকবালি ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আলোকবালি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড (৭,৮ ও ৯) এর সদস্য খুরশিদা বেগম খুশির স্বামী। তাকে সবাই আলোকবালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিপুর বডিগার্ড হিসেবেই চিনেন।
আর যাকে ফোন দেওয়া হয়েছে তিনি একই ইউনিয়নের মুরাদনগর গ্রামের আইনুল ইসলাম। ইউনিয়ন যুবলীগের একজন কর্মী এবং আলোকবালি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আসাদুল্লাহর বিশ্বস্তজন।
ফোনালাপে নরসিংদী থেকে বোর্ট যোগে ১০/১৫টি অস্ত্রসহ ১৫/২০ কেজি বোমা তৈরির কাঁচামাল বস্তাবন্দি করে আলোকবালিতে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।
এ ফোনালাপের বিষয়ে জানতে আইনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিগত ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা দীর্ঘদিন বাড়ী ছাড়া ছিলাম, পরবর্তীতে আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় গেলে আমাদের প্রতিপক্ষের জন্য গ্রামে উঠতে পারিনি। বাধ্য হয়ে আমরা পাশ্ববর্তী গ্রাম কাজির কান্দিতে আশ্রয় নেই। সেখানে থেকে গ্রামে ঢুকার সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম একদিন কৌশলে সেই সুযোগ বের করে গ্রামে ঢুকে যাই। তবে আমরা গ্রামে ঢুকে কোন ধরণে নৈরাজ্যপূণ্য কাজে জড়িত হইনি বা চালাইনি। মিটল আমাদের প্রতিপক্ষ দলের লোক। তবে ছোটবেলা থেকে এক সাথে চলার সুবাদে মাঝে মধ্যে মোবাইলে কথাবার্তা হয়। গ্রামে আসার কয়েকদিনে পর সে আমাকে ফাঁসাতে ফোন করে নৌকা যোগে অস্ত্র পাঠানোর কথা বলে। আমি তার উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে আমাদের কথা রেকর্ড করি। পরবর্তীতে এই রেকর্ড আমি আমার লিডারের কাছে পাঠিয়ে দেই এবং ওনার নির্দেশেই ফোনালাপটি ফেইসবুকে ভাইরাল করে দেই। তবে এটা সত্য যে আমাদের কে পূণরায় গ্রাম ছাড়া করতে এবং আলোকবালিতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে এই অস্ত্রগুলো সেদিন ঠিকই আলোকবালিতে আনা হয়েছে।
এব্যাপারে কথা বলতে মিটল মিয়ার মোবাইল ফোন ০১৭১০১০৩৬৩১ নাম্বারে বেশ কয়েকবার ফোন দিলে সে বার বার সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে অস্ত্রের প্রেরক মিটল মিয়াকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অস্ত্র ও আলোকবালির সহিংসতার ঘটনার নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যাবে বলে নরসিংদীবাসী মনে করেন। তাই যত দ্রুত সম্ভব তাকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছে নরসিংদীবাসী।
এ ব্যাপারে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠানের সাথে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান।