খাসখবর প্রতিবেদক
করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আগামী ১ জুলাই বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশেকে কঠোর লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। ১ জুলাই ভোর ৬টা থেকে ৭ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত একেবারে কঠোরতম লকডাউন করা হবে। কোন শিথিলতা দেখানো হবে না। এসময় জরুরি সেবা ছাড়া ঘর থেকেও বের হতে পারবে না মানুষ। এ বিষয়ে মন্ত্রিসভায়ও আলোচনা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সচিব এসব তথ্য জানান। এর আগে সকালে সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পয়লা জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত খুব কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার, খুবই কঠোর অবস্থানে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘চারটি বিভাগের সঙ্গে আমরা ভিডিও কনফারেন্স করেছি। ডিসি, কমিশনার, ডিআইজি, এসপি, সিভিল সার্জন, জনপ্রতিনিধিসহ মাঠপর্যায়ের সবাই ছিলেন। দেশের কিছু অংশ করোনাঝুঁকির সংকেতে অরেঞ্জ, রেড বা ব্রাউন হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং, এখন কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ছাড়া উপায় নেই। তাই ১ জুলাই থেকে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার।’
এবার মুভমেন্ট পাস থাকবে না জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কেউ বের হতে পারবে না, পরিষ্কার কথা। তবে জরুরি প্রয়োজনে অবশ্যই বের হতে পারবে।’
মুভমেন্ট পাস না থাকলে জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়ার পদ্ধতি কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বের হওয়া যাবে না, বাসায় থাকতে হবে সবাইকে। কিন্তু ধরেন দাফন-কাফন করতে হবে, সেটা তো বাসায় করা যাবে না, সেসময় বের হওয়া যাবে। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাবেন, সেক্ষেত্রে বের হতে পারবেন।’
লকডাউনের মধ্যে অসহায় দরিদ্রদের কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা বৈঠকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় যথাসম্ভব গতবারের মতো প্রোগ্রাম নিতে হবে। বিশেষ করে শহর এলাকায় বেশি সমস্যা হয়, সেখানে খেয়াল রেখে সাহায্য নিশ্চিত করা হবে।’
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘পয়লা জুলাই থেকে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে গোটা দেশ। কিভাবে এই কঠোর অবস্থা বলবৎ নাখা যাবে তার কৌশল বাস্তবায়নে আগামীকাল (মঙ্গলবার) বা পরশু বসে নির্ধারণ করব। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ টহলে থাকবে। তাদের যতটুকু সম্ভব, যা দরকার সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাদের অথরিটি দিয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে কোনোভাবেই মানুষ বের হতে না পারে, তা মনিটর করবে।’
সশস্ত্র বাহিনী টহলে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ কথা না শুনলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া তাদের দায়িত্বের মধ্যে থাকবে। রিকশা চলবে কি না, আদেশে বলে দেয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, দেশে করোনা মহামারির প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করায় সরকার সোমবার (২৮ জুন) থেকে সীমিত পরিসরে লকডাউন কার্যকর করছে। তবে অর্থবছরের শেষ হওয়ায় সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।