জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, পলাশ
নরসিংদীর পলাশে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক নারীর ওপর এসিড নিক্ষেপ করে জ্বলসে দিয়েছে শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়া (৩০) নামে এক বখাটে। এতে দগ্ধ ওই নারীর বাম হাত ও পিঠসহ কোমড় পর্যন্ত এসিডে জ্বলসে যায়। বর্তমানে ওই নারী নরসিংদীর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাতরাচ্ছেন। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) ভোর রাতে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় পলাশ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ই বখাটে শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়াকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়া নারায়গঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার টাওরা গ্রামের মৃত রহিম মিয়ার ছেলে।
বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগি ওই নারী রত্না আক্তার বাদী হয়ে পলাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
মামলার এজাহার সূত্রে ও ভুক্তভোগি রত্না আক্তারের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সন্তানের জননী ডিভোর্সী ভুক্তভোগি রত্না আক্তার (২৫) তার মেয়েকে নিয়ে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে বাবা মুজিবুর রহমানের বাড়িতে বসবাস করে আসছে। গত ৪ মাস পূর্বে পার্শ্ববর্তী রূপগঞ্জ উপজেলার শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়া বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে বাড়িতে। এরপর শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়ার স্বভাবগত বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে ওই বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করে দেয় রত্না আক্তার ও তার পরিবার। তারপরও বখাটে শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়া বিভিন্ন সময় রাস্তা-ঘাটে রত্না আক্তারকে একা পেলেই বিয়ের প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু প্রতিবারই বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ভুক্তভোগি রত্না আক্তার। বার বার রত্নার কাছ থেকে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যিত হলে বখাটে শফিকুল ইসলাম পঙ্খী ক্ষিপ্ত হয়ে রত্না আক্তারকে প্রাণ নাশের হুমকিসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখানো শুরু করে। একপর্যায়ে গত ২ জুলাই রাত আনুমানিক সাড়ে ৩ টার দিকে ভুক্তভোগি ভুক্তভোগীর বাড়ির পিছন দিয়ে এসে ঘরের দরজার ফাক দিয়ে ঘুমন্ত রত্নাকে উদ্দেশ্য করে বখাটে শফিকুল ইসলাম পঙ্খী এসিড ছুড়ে মারে। ওই এসিড রত্না হাত, পা ও পিঠে পড়লে তা জ্বলসে যায়। এসময় সে আত্মচিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে বখাটে পঙ্খী মিয়া পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা রত্নাকে উদ্ধার করে পলাশ উপজেলা স্থ্যাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে নরসিংদীর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
পলাশ উপজেলা স্থ্যাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এসিডে ওই নারীর বাম হাত ও পিঠসহ কোমড়ের ১২ থেকে ১৬ শতাংশ জ্বলসে গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নরসিংদীর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ঘুমন্ত ওই নারীর শরীরে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত শফিকুল ইসলাম পঙ্খী মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসিড নিক্ষেপ করার কথা স্বীকার করেছে। এব্যাপারে ভুক্তভোগি রত্না আক্তার বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।