মো: শাহাদাৎ হোসেন রাজু
নরসিংদী রায়পুরায় বয়স্ক ও বিধবা ভাতার সুবিধাভোগিরা প্রতারণার ফাঁদে।তারা ভাতা প্রাপ্তির অর্থ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর তাদেরকে বঞ্চিত করেছে নগদ’র (মোবাইল ব্যাংক) একাউন্ট করিয়ে দেওয়া মাঠকর্মীরা। এমনই অভিযোগ উঠেছে গোটা উপজেলা জুড়ে।
বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহিত বয়স্ক ও বিধবাদের ভাতা প্রদানের বিষয়টি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। রায়পুরায় প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপটি কুলষিত করেছে ডাক বিভাগের মোবাইল ফোনে ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী সংস্থা ‘নগদে’র কিছু মাঠকর্মী।
সরকার বয়স্ক ও বিধাবা মহিলাদের সুবিধার্থে ইউনিয়ন পরিষদে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে যাতে না হয় নগদে’র মাধ্যমে সকলের মোবাইল ফোনে ভাতা দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নেন। আর দরিদ্র অশিক্ষিত এই জন গোষ্ঠির মোবাইল ফোনে একাউন্ট করিয়ে দেওয়ার জন্য ‘নগদ’ সংস্থাটির ওপর ন্যাস্ত করে সরকারে সমাজ সেবা অধিদফতর । আর কাজের জন্য ‘নগদ’ মাঠ পর্যায়ে মাঠকর্মী নিয়োগ দেন।
ওই মাঠ কর্মীরা ভাতার সুবিধাভোগিদের একাউন্ট করিয়ে দেওয়ার নাম করে তাদের নিজেদের নগদ করা আছে এমন একটি নাম্বার ওইসব মানুষদের কাগজে তুলে দেয়।সরকারের দেওয়া সুবিধাভোগি মানুষগুলো গ্রামের লেখাপড়া না জানা অতি সাধারণ, স্বল্প শিক্ষিত হওয়ায় তাদের কাগজে অন্যকোন মোবাইল নাম্বার লিখে প্রতারণা করার বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেনি।
ভাতা প্রদান শুরু হলে সুবিধাভোগিদের মধ্যে
এলাকার কয়েকজনের মোবাইলে ভাতার টাকা আসলে যারা প্রতারিত হয়েছে এমন অনেকেই ইউনিয়ন পরিষদেছুটে আসেন এবং তাদের সাথে হওয়া প্রতারনার বিষয়টি জানতে পারে। পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মোবাইল নাম্বারটি সংশোধনের জন্য উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে রায়পুরা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে ঘুরে আসলে সরকারে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে কাজ করার জন্য এসময় বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান তাদেরকে স্বাগত জানান এবং তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন। আবার এর উল্টোটাও হয়েছে। তার মধ্যে বলা যায় পলাশতলী ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের কথা। এই প্রতিবেদক তার সহকর্মীদের নিয়ে পলাশতলী ইউনিয়নে হাজির হলে চেয়ারম্যান তাদেরকে পাশ কাটিয়ে চলে যান। এসময় তার কথা বলতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন কিছুক্ষণ আগে আরও কয়েকজন সাংবাদিক এসেছিল তাদের সাথে যা বলার বলে দিয়ছি, এ বলে তিনি চলে যান। পরে ইউপি সচিবে কাছ থেকে তথ্য নিতে গেলে ওই পরিষদে তিনি সদ্য যোগাদন করেছেন বলে এ বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য তার কাছে নেই বলে জানান।
এ প্রতিবেদক উত্তর বাখরনগর ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হন বেলা তখন সাড়ে ১২টা। এসময় চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নূরুকে পরিষদে পাওয়া গেলেও সচিব কিংবা হিসাব সহকারী এদু’জনের কারোই দেখা মেলেনি। চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম বয়সের ভারে নূহ্য তার উপর মস্তিস্কে রক্তক্ষরণের ফলে ঠিক ভাবে কথা বলতে পারেন না।
এসময় প্রতিবেদক সচিব আল আমিনের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি পরিষদে আসবেনা বলে জানান। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।
ইউনিয়ন পর্যায়ে সরেজমিন শেষে প্রতিবেদক রায়পুরা উপজেলা পরিষদে উপস্থিত হয়ে সমাজ সেবা কর্মকর্তার কক্ষে গেলে উনাকে পাওয়া যায়নি।। অসুস্থতা জনিত কারণে তিনি ছুটিতে আছেন বলে তার দফতর থেকে জানানো হয়। পরে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এবিষয়ে লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি।’ তার দফতরে সংশোধনের জন্য যে নাম্বারগুলো আসছে সেগুলোকে অভিযোগ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি জানান. কেবল মাত্র লিখিত অভিযোগ পেলেই তিনি তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারবে।
এব্যাপারে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আজগর হোসেন’র কক্ষে গিয়ে উনাকে না পেয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি অবগত আছেন বলে জানান। তবে এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিতে হলে তা সমাজ সেবা অধিদফতর থেকে নিতে হবে। স্থানীয় ভাবে কিছু করার সুযোগ নেই।