আজ ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নরসিংদী চেম্বারের নির্বাচন নিয়ে ধুম্রজাল; দ্বিধা দ্বন্দ্বে ব‍্যবসায়ী ভোটাররা

খাসখবর প্রতিবেদক

নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাচন নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। এতে জেলার সাধারণ ব‍্যবসায়ীরা পড়েছেন দ্বিধা দ্বন্দ্বে। এফবিসিসিআই আর্বিটেশন ট্রাইব্যুনালের রায়, অন‍্যদিকে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে যথাসময়ে চেম্বারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এমন বক্তব‍্যে এ ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়।

নরসিংদী চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের বর্তমান কমিটি ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের বার্ষিক সাধারণ সভা না করে নির্বাচন করতে যাচ্ছে এ মর্মে একজন সদস্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন আইন-২০২২ এর ২০ ধারা অনুযায়ী গঠিত এফবিসিসিআই আর্বিটেশন ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে। ওই সদস‍্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস‍্যের এফবিসিসিআই আর্বিটেশন ট্রাইব্যুনাল গত ১ ডিসেম্বর শুনানী শেষে বর্তমান পরিষদের ১৮ জন সদস্যেকে আগামী ৬ বছরের জন্য দেশের সকল বাণিজ্যিক সংগঠনে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করে রায় প্রদান করেন। তবে উক্ত রায়ে নির্বাচন স্থগিত রাখার এমন কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নরসিংদী চেম্বার ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান কমিটির প্রেসিডেন্ট আলী হোসেন শিশির চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান।

তিনি জানান, সম্প্রতি এফবিসিসিআই আর্বিটেশন ট্রাইব্যুনাল যে রায় দিয়েছে তা ছিল সম্পূর্ণ পক্ষপাতিত্ব মূলক। তিনি ট্রাইব্যুনালে প্রয়োজনী কাগজপত্র জমা দিলেও সেগুলো পর্যালোচনা না করে একতরফা রায় প্রদান করেন। তাই তিনি সে রায়ের বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

এদিকে চেম্বার প্রেসিডেন্টের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এফবিসিসিআইর আর্বিটেশন বোর্ডের আদেশ বহাল রেখে এ রায় কেন অবৈধ হবে না জানতে চেয়ে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শাণোর নোটিশ দেন আর্বিটেশন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদকে।

সংবাদ সম্মেলনে আলী হোসেন শিশির জানান, নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের বর্তমান পরিষদের যে ১৮ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাদের মধ্যে ১১ জন আগামী ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব‍্য নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তাদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। এ সময় তিনি আরও জানান, যদি এ রায় শেষ পর্যন্ত হাইকোর্ট বহাল রাখেন তাহলে পুনরায় ১১ জনের বিপরীতে আবার নির্বাচন হবে।

প্রেসিডেন্ট আলী হোসেন শিশিরের এ কথায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি জেলার অনেক সাধারণ ব‍্যবসায়ীসহ ব‍্যবসায়ী নেতাদের একাংশ। তাদের মতে ট্রাইব্যুনাল যাদের অযোগ‍্য ঘোষণা করেছেন নির্বাচনে তাদের ১১ জন প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালার পরিপন্থি। বিধি মোতাবেক ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত ওই ১৮ সদস্যের মধ‍্যে কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হলে তবে তার সেই প্রার্থীতা অবৈধ হবেন।

তারা জানায়, ট্রাইবুনালের রায়ে আরো উল্লেখ করা হয় যে, নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের এ সংকট নিরসনে ব্যবসায়িক সংগঠনের মহাপরিচালক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ৬ মাসের জন‍্য প্রশাসক নিয়োগ করতে বলা হয়। নিয়োগকৃত ওই প্রশাসকের অধীনে বিধি মোতাবেক নির্বাচন সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান কমিটি এফবিসিসিআইর আর্বিটেশন ট্রাইব্যুনালের রায়কে উপেক্ষা করে অবৈধ ভাবে নির্বাচন করা পায়তারা করছে।

চেম্বার ব‍্যবসায়ী নেতাদের একাংশের মতে, এফবিসিসিআই এর আর্বিটেশন ট্রাইবুন্যালের রায় উপেক্ষা করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে অবৈধ কমিটির আজ্ঞাবহ নির্বাচনী বোর্ড। আগামী ২১ ডিসেম্বর নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন ধার্য্য করেছে গঠিত নির্বাচন কমিশন। বিতর্কিত এই নির্বাচনকে ঘিরে জেলার সাধারণ ব‍্যবসায়ী এবং নেতৃবৃন্দের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সাধারণ ব্যবসায়ীরা আছেন দ্বিধা দ্বন্দ্বে। নির্বাচন কি আদৌ হবে কি না এমনই একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন এখন জেলা সাধারণ ব‍্যবসায়ীদের সামনে।

নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচন ঘিরে ব্যবসায়ীরা দুটি বড় গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। দিন দিন জটিল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে আছেন সাধারণ ব‍্যবসায়ী ভোটাররা।

নরসিংদী চেম্বার নির্বাচন-২০২২ এর নির্বাচন বোর্ড এর চেয়ারম্যান সাংবাদিক মাখন দাস বলেন, এফবিসিসিআই এর আর্বিটেশন ট্রাইবুন্যালের আদেশ এর একটি কপি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী মমিনুর রহমানের মাধ্যমে পেয়েছি। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এই বিষয়ে কোন আদেশ এখনো পর্যন্ত পাইনি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আদেশ পেলে আইন বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ