মানাবেন্ড রায়
শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে নরসিংদীতে শুরু হলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। আগামী ১ অক্টোবর থেকে শুরু হবে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব।
রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ছিল মহালয়া।দুর্গাপূজার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো মহালয়া। এই দিন থেকে দেবীপক্ষের শুরু। এই দিনেই কৈলাস থেকে পিতৃগৃহে আগমন করেন মা দুর্গা। শ্রীশ্রী চণ্ডিপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীর আবাহন মহালয়া হিসেবে পরিচিত। আর এই চণ্ডিতে আছে দেবীর সৃষ্টির বর্ণনা। দুর্গোৎসবের তিনটি পর্ব- মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা। পুরাণ মতে, মহালয়ার দিন মহিষাসুর বধের দায়িত্ব নেন দেবী দুর্গা।
পঞ্জিকা মতে, এ বছর দেবী দুর্গার আগমন গজ বা হাতিতে। এর ফলে বসুন্ধরা হবে শস্যপূর্ণ। আর দেবীর বিদায় হবে নৌকায়, যার অর্থ শস্য ও জলবৃদ্ধি। দেবীর এই আগমন ও গমনে যারা বিশ্বাস করেন, তাদের জন্য এ বছরটা সত্যিকার অর্থেই কল্যাণকর।
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর সাত্ত্বিক পূর্জা-অর্চনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল দুর্গাপূজা। তবে এবার উৎসবমুখর পরিবেশে নরসিংদীর ৩৫৬টি পূজামণ্ডপে উদযাপিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।
মহালয়া উপলক্ষে নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে ‘দেবী পক্ষের আগমন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শহরের শহীদ ছাত্তার সড়কে দয়াময় আশ্রমে সামনে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী পৌর মেয়র এড. আমজাদ হোসেন বাচ্চু।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবু অনিল ঘোষ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত কুমার দাস।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রনব সাহা সেন্টুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী জেলা যুবলীগ সভাপতি ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী, নরসিংদী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি মাখন দাস, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি জ্যোতিরাম দাস, ডা. সুবিনয় কৃষ্ণ পাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মলয় কুমার বর্মন, তন্ময় কুমার দাস তনু, শহর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উত্তম মোদক ও সাধারণ সম্পাদক বিনয় সাহা প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, এ বছর নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় মোট ৩৫৬টি মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে সবধরনে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ। মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। মণ্ডপগুলোতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে।
আলোচনা সভা শেষে চিত্রা বাউলের পরিচালনায় পূরবী সঙ্গীত একাডেমীর শিল্পিদের পরিবেশনায় এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ধর্মীয় ভক্তিমূলক গান ও নৃত্যের মধ্যদিয়ে দেববন্ধনা ফুটিয়ে তোলা হয়।