মাজহারুল ইসলাম রাসেল
নরসিংদীতে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২ তম শুভ জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২২ পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শহরের শেরেবাংলা ক্লাব প্রাঙ্গনে আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ হোসেন সরকারের উদ্যোগে জাতির পিতার জন্মদিনটি বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে পালন করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার শান্তি কামনা করে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও মসজিদে মসজিদে দোয়া, এতিমখানাগুলো সুস্বাদু খাবার পরিবেশন আলোচনা সভা, কেক কাটা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।
দিনব্যাপী আয়োজনের ১ম অধিবেশনে জমকালো ও উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সকাল থেকে কোরআন তেলাওয়াত, বিভিন্ন মসজিদে বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া, দুপুরে এতিমখানায় সুস্বাদু খাবার পরিবেশন, বিকালে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ প্রচার করা হয়।
২য় পর্বের আলোচনা সভায় আশরাফ হোসেন সরকার বলেন,মুক্তির মহানায়ক, স্বাধীনতার স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেতাম না। আজ ১৭ই মার্চ। ১৯২০ সালের এদিনে শেখ সাহেরা খাতুনের কোল আলোকিত করে জন্ম নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার এ জন্মগ্রহণে বাঙালি জাতি আজ গর্বিত। তাই আজকের এদিনটিকে স্বরণীয় করে রাখার জন্য আমি বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী হয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে শিশু-কিশোর ও দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২ তম শুভ জন্মদিনের আয়োজন করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে পাক-হানাদার বাহিনীর পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক দেশের স্থান পেতনা। রেসকোর্স বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্যেমে গোটা বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তার কল্যাণেই আজ আমরা বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি। মায়ের ভাষা বাংলায় কথা বলতে পারি, বাক-স্বাধীনতা প্রকাশ করতে পারি, তিনি চিরঞ্জীব।
আশরাফ হোসেন সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলো শিশু প্রিয় মানুষ। তিনি শিশুদের আদর, স্নেহ ও ভালোবাসতেন। তাই বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনি আরো বলেন, আজকের শিশু আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। তাই শিশু-কিশোরদের কাছে বেশি বেশি করে বঙ্গবন্ধুর জীবনী তুলে ধরতে হবে। আগামীদিনে যাতে করে শিশু-কিশোররা বঙ্গবন্ধু, দেশ এবং স্বাধীনতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারে।
উপস্থিত শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আজকের শিশু-কিশোররাই আগামী দিনে এ দেশকে নেতৃত্ব দিবে। আমি আমার নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা মমতাময়ী মা বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজনীতি করি। তার নির্দেশ মোতাবেক দলীয় ও জাতীয় সবগুলো অনুষ্ঠান পালন করছি। পদ-পদবী বড় কথা নয়, আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শবান কর্মী ও মাননীয় নেত্রীর নির্দেশ সঠিকভাবে পালন করতে পারলেই দলকে সুসংগঠিত করা যায়। আমার কোন পদ-পদবী নেই আমার আছে নেত্রীর আস্থা ও ভালোবাসা এবং তৃণমূল নেতা- কর্মীদের শক্তিই আমার রাজনৈতিক প্রেরণা। তাই আমি আগামীদিনে আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে নরসিংদীতে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করবো (ইনশাআল্লাহ)। আগামীদিনে দেশকে পরিচালনা করতে গেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করতে হবে।
তাঁতী লীগ নেতা শেখ মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা লীগের সভাপতি ও সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সামসুউদ্দিন, জেলা তাঁতী লীগের আহবায়ক কায়কোবাদ হোসেন কানু, জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুভাষ সাহা, নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মিয়া মোহাম্মদ মঞ্জুর, বাংলাদেশ পল্লী চিকিৎসক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সবুজ আলী, নজরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল সিরাজী, শহর আওয়ামী লীগের সদস্য মোমেন মিয়া, জেলা তাঁতী লীগ নেতা হিরু সরকার, মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপিকা আইরিন পারভীন, শিউলি হাবিব, মালা রানী দাস, নজরপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মোস্তফা আলী সরকারসহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফেরাত কামনা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন স্থানীয় দারুল উলুম দত্ত পাড়া মাদ্রাসার শিক্ষক ও ইমাম মাওলানা হাফেজ আসাদুজ্জামান। দোয়ার পর এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দলীয় নেতৃবৃন্দ ও শিশু কিশোরদের নিয়ে কেক কাটেন আশরাফ হোসেন সরকার।