খাসখবর প্রতিবেদক
নরসিংদীতে পৃথক পৃথক অভিযানে ২ ইউপি চেয়ারম্যান ও তাদের সহযোগিসহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় ২টি বিদেশী পিস্তলসহ দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা ডাকাতি, চরাঞ্চলে সহিংসতাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত দুইদিনে (রবি ও সোমবার) নরসিংদী সদর, পলাশ, রায়পুরা ও মাধবদী থানা এলাকায় পৃথক ৪টি অভিযানে তাদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে দুটি বিদেশি পিস্তল, একটি দোনালা বন্দুক, একটি পাইপগান, ৫টি গুলি, ৬টি কার্তুজ, ২টি ছোরা, একটি চাইনিজ চাইনিজ কুড়াল, একটি রামদা, একটি চাপাতি ও ১২৫ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট। এছাড়াও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত একটি কাভার্ডভ্যান ও একটি সিএনজি জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান।
সংবাদ সম্মেলনে সাহেব আলী পাঠান জানান, নরসিংদীর চরাঞ্চলগুলোতে খুন সহিংসতাসহ জেলায় বিভিন্ন অপরাধে জড়িতদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পৃথক অভিযান পরিচালনা করে জেলা পুলিশ। এসময় টেটাঁযুদ্ধের মূল হোতা আলোকবালী ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু, মির্জারচর ইউপি চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক ও তাদের ১১ সহযোগীকে বন্দুক ও ধারালো অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়।
তিনি জানান, সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মাধবদী থানার আমদিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কুখ্যাত ডাকাত শাহ আলমসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করে মাধবদী থানা পুলিশ। এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঘোড়াশাল মিয়াপাড়া এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে বিদেশি পিস্তল, কাভার্টভ্যান ও সিএনজিসহ মোট চার ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।
অপরদিকে, গত ৩০ জানুয়ারি বিকেলে সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু (৫০), স্থানীয় টেঁটাযুদ্ধের হোতা হিসেবে চিহ্নিত আবদুল মতিন মেম্বার (৫৮), আসাদুল্লা মিয়া ও তাদের ৪ সহযোগীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের সবার বিরুদ্ধে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে গ্রাম বাসিদের একাধিকভাগে বিভক্ত করে টেঁটাযুদ্ধের উস্কানির অভিযোগ রয়েছে। তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়াও, সোমবার রাত ৮টার দিকে রায়পুরা উপজেলার মির্জারচর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাফর ইকবাল মানিককে একটি দুই নলা বন্দুক ও চারটি কার্তুজসহ গ্রেফতার করে রায়পুরা থানা পুলিশ। একই দিনে মির্জারচর ও বাঁশগাড়ী এলাকার টেঁটাযুদ্ধের সহকারী হিসেবে চিহ্নিত আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধেও আধিপত্য বিস্তার ও টেঁটাযুদ্ধের মাধ্যমে সহিংসতা সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে।
সাহেব আলী পাঠান বলেন, গ্রেফতারদের মধ্যে ৭ জনই ডাকাত। তাদের সবার বিরুদ্ধেই জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। আর মির্জারচর ও বাঁশগাড়ি এলাকায় টেঁটাযুদ্ধের সহকারী মানিক মিয়ার নামেও পূর্বের খুনসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এছাড়া মাধবদী ও পলাশ থানার ঘোড়াশাল থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ আরও ৭জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।