আজ ৩রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দেশ মানুষের কল্যাণে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করা হবে

জুবায়ের আহমেদ জনি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ৫ আগষ্ট পর্যন্ত আমাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বৈরাচার হটানো। এখন দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষা করাসহ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে কাজ করতে হবে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে কোদাল হাতে মাঠে নেমেছিল। সেই দলের নেতা হিসেবে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ও জনসম্পৃক্তি নিশ্চিত করতে নরসিংদীর হেরিটেজ রিসোর্টে বিভাগীয় কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, দল ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে নেই। দুষ্ট লোকদের দুষ্টমি থেমে নেই। সেটি আমাদের দেশের ভেতর ও বাহির উভয় জায়গাই হচ্ছে। কারণ এই দেশের অর্থ ও প্রাকৃতিক সম্পদে অনেকেই মন্দ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। এই দেশে যদি একটি বিশৃঙ্খলা লাগিয়ে রাখা যায় এটা অনেকের জন্য ভালো সুযোগ। এই দেশে যদি দূর্বল জন সমর্থনহীন সরকার ক্ষমতায় রাখা যায়,তাহলে অনেকেই অনেক কিছু লুটে পুটে নিতে পারবে। কিন্তু এই দেশে যদি জনগনের সমর্থিত সরকার জনগণের কথা বলবে, জনগনের কথা চিন্তা করবে। যারা দেশের কথা বলবে দেশের কথা চিন্তা করবে,এমন কেউ যদি দেশে পরিচালনার দায়িত্বে থাকে, তখন দেশের স্বার্থ ও জনগনের স্বার্থ নিরাপদে থাকবে। যারা শকুনের দৃষ্টি দিয়ে দেশটার দিকে তাকিয়ে আছে। এইদেশের প্রাকৃতির সম্পদের দিকে তখন তারা ১০ বার চিন্তা করবে।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, রাষ্ট্রিয় ক্ষমতার সুযোগ পেলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবে বিএনপি। এজন্য যে কোন মুল্যে ৩১ দফার পক্ষে সমর্থন নেয়ার জন্য জনগণের পিছনে ঘুরতে হবে। এই ছাড়া আর কোন উপায় নেই। জনগণের সম্পৃক্ততায় স্বৈরাচারি পালিয়েছে, তবে দেশের ভেতরে-বাইরে দেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বর্তমানে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রাম শুরুহয়েছে। সংগ্রাম করেই ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সংসদে দাড়িয়ে বলতে বাধ্য হয়েছিল, বিএনপির আমলে, দেশে ছোট বড় মিলিয়ে ৮০ হাজার কলকারখানা স্থাপন করা হয়েছে । আমাদের সময় সংবাদ পত্র আমাদের বিরুদ্ধে ম্যাডামের বিরুদ্ধে দলের বহু নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কত কি লিখেছিল। কিন্তু আমরা বলেছি, আমরা বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেছি। আমাদের সময়তো পত্রিকার সম্পাদকদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা হয়নি। যেমন আমাদের বিরুদ্ধে ও আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়েছে। একই ভাবে আমরা যখন দেশ পরিচালনার দায়িদ্ধে ছিলাম তখনকি গুম খুন হয়েছিল? আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহাম্দেদ টুকুকে সিমান্তের উপারে নিয়ে ফেলে দিয়ে আসঠিল। সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী সহ অনেক নেতাকর্মীকে গুম খুন করা হয়েছিল। কোথায় বিএনপির সময়তো এমন হয়নি। কারন আমরা গনতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।
বিএনপির আমলেই আমরা দেশের শিল্প কারখানার উৎপাদন বাড়িয়েছি। আবার সুযোগ পেলে আমরা এই কাজ গুলো পুনরায় আরো ভালো ভাবে করবো।দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে প্রয়োজনে ৩১ দফা আরও বাড়ানো হবে । এই ৩১ দফা তখনই বাস্তবায়ন করতে হলে প্রথমেই জনগণের রায় আমাদের প্রয়োজন। তাই যে কোন মুল্যে স্ব স্ব অবস্থান থেকে আপনাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগনের পাশে থাকতে হবে।
ভবিষ্যতে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হবে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, চিকিৎসার জন্য কাউকে বাহিরে যেতে হবে না। দেশেই উন্নত মানের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হবে। সকল মানুষ দেশেই স্বাস্থ্য সেবা পাবে। সারাদেশে পল্লী চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে। এর মধ্যে বেশি মহিলা চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। কারণ তারা ঘরে ঘরে গিয়ে চিকিৎসা করতে পারবে। যার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ দ্রুত করা যাবে।
বর্তমানে যুব সমাজ মাদককে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে বিএনপির এক নেতার প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান বলেন, গত ১৫ বছরে দেশে খেলাধূলার ব্যবস্থা নেই, ডিবেটিং করার ব্যবস্থা নেয়। যুবকরা তাদের সময় কাটানোর উপযুক্ত কোন সুযোগ পাচ্ছে না। তাদের নিয়ে কোন উদ্যোগ না নেওয়ার কারণে যুব সমাজ মাদকে জড়িয়ে যাচ্ছে। তারা যেনো তাদের মেধা বিকশিত করতে পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে তারেক রহমান বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো হবে। মেধাবীরাই প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হবে। তাদের ভালো ভাবে প্রশিক্ষণ করানো হবে। প্রতি বছর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের আপডেট করানো হবে। বাচ্চাদের সুনাগরিক করে গড়ে তোলার দায়িত্ব শিক্ষকদের।
দেড় কোটি প্রবাসীদের পর্যায়ক্রমে তাদের ভোটের অধিকার বাস্তবায়ন করা হবে। ক্ষমতায় গেলে তাদের এই অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করা হবে।
বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির আহব্বায়ক খায়রুল কবির খোকনের সভাপতিত্বে এ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, সহ-ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক হালিমা নেওয়াজ আরলি, সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আক্তার, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিছুর রহমান তালুকদার খোকন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনজুর এলাহী, মনোহরদী বেলাব আসনের সাবেক সাংসদ সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল সহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ