ফরহাদ আলম, রায়পুরা, নরসিংদী
নরসিংদীর রায়পুরার আমিরগঞ্জে জলবদ্ধতায় প্রায় ২ শ’ পরিবার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে । বৃষ্টি পানি নিষ্কাশনে কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এ জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের করিমগঞ্জ বড় ঘাট এলাকার এ পরিবারগুলো জলবদ্ধতার ফলে গৃহবন্দি হয়ে পড়ে। পরিকল্পিত একটি ড্রেনেজ ব্যবস্থাই এই জলবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে পারে মনে করছেন এলাকাবাসী।
গৃহবন্দি পরিবারগুলোর খবরে সরেজমিনে জোনাকী টেলিভিশনের টিম এলাকা পরিদর্শনে গেলে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে জলবদ্ধতার ফলে এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়ী-ঘর হাটু পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক বাড়ীতে ঘরের মেঝে ছুই ছুই করছে পানি। এদিকে পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় পানির তোরে এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বড় ঘাট পাড় মসজিদের এবং ঘাট এলাকায় ভেঙ্গে বিশাল এক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয় মসজিদের সীমানা প্রাচীরের তলদেশও এ ভাঙ্গনের ফলে ধসে গেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বালু ফেলে সৃষ্টি হওয়া গর্ত ভরাটে পানিবন্দি মানুষগুলো প্রাণান্তর চেষ্টা চালিয়ে গেলেও তা কতক্ষণ টিকিয়ে রাখা যাবে সেটাই প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, আগে বাড়ী-ঘর কম থাকায় এই এলাকার পানি সোজা করিমগঞ্জ বড় বিলে গিয়ে পড়তো। কিন্তু বর্তমানে এলাকাটি ঘনবসতিতে রূপ নেয়। তাছাড়া বিলের বড় ঘাট এলাকা দখলে নিয়ে ঘর-বাড়ী তৈরি করে পানি যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে এই জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পরিকল্পিত একটি ড্রেনেজ ব্যবস্থা এই জলবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে পারে এলাকার পানিবন্দি মানুষগুলোকে। সরকারী ব্যবস্থাপনায় একটি ড্রেন নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী তিন বছর আগে নরসিংদী জেলা পরিষদে একটি আবেদন করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গত ৩ বছরে এলাকাবাসীর হয়নি ভাগ্যে পরিবর্তন । জেলা পরিষদ থেকে ড্রেন নির্মাণে নেওয়া হয়নি কোন উদ্যোগ।
মোমেন মিয়া নামে একজন এলাকাবাসী বলেন, একটি ড্রেন নির্মাণের জন্য আমরা হাসনাবাদ প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক নজরুলের হাত দিয়ে জেলা পরিষদে আবেদন করলেও এখনও এর কোন ফল পাইনি। আমাদের এলাকার পানি সরাতে প্রয়োজন একটি ড্রেনের। একটি ড্রেন থাকলে আমাদেরকে আজ এতো দূর্ভোগ পোহাতে হতো না।
মাহবুব হোসেন নামে অপর এক এলাকাবাসী বলেন, বৃষ্টির পানি সরে যাওয়ার পথ না থাকায় আমরা এলাকার প্রায় দুই থেকে আড়াইশ’ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছি। পানি সরে যাওয়ার জন্য একটি ড্রেন থাকলে আমাদেরকে এই কষ্টের মধ্যে পড়তে হতো না। এলাকাবাসীকে এই জলবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে একটি ড্রেন নির্মাণের জন্য আমিরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যানসহ আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
নাজিম উদ্দিন ভেন্ডার নামে আরেকজন এলাকাবাসী বলেন, সরকারী উদ্যোগে এই এলাকায় একটি ড্রেন নির্মাণ করা হলে আর জলবদ্ধতা সৃষ্টি হবেনা। সেজন্য ইউপি চেয়ারন্যানসহ উপর মহলের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এব্যাপারে আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি অবগত নন। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কেউ তাকে অবগত করেননি।
তিনি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তার বরাবর একটি আবেদন করা কথা বলেন এবং এর সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান।