আজ ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কে হচ্ছেন রায়পুরার পৌর পিতা? জানতে মুখিয়ে আছে পৌরবাসী

খন্দকার শাহ নেওয়াজ

আর মাত্র কয়েক ঘন্টা পর নরসিংদীর রায়পুরা পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কে হচ্ছেন আগামী ৫ বছরেরর জন্য রায়পুরা পৌর পিতা পৌর মেয়র,। সেই অপেক্ষায় মুখিয়ে আছে পৌরবাসী। এটি রায়পুরা পৌরসভার ৪র্থ নির্রাচন। এর আগে আরও ৩টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রায়পুরা পৌরসভার ৪র্থ এই নির্বাচনের আগামী ২৬ ডিসেম্বর ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হবে। এই রায়পুরা পদ্ধতিতে পৌরবাসী এইবার প্রথম তাদেও ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। রায়পুরা পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বিএনপির স্বতন্ত্র এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর চেয়ে বিদ্রোাহীদের অবস্থা শক্তিশালী বলে মনে করছেন ভোটাররা। দুই বিদ্রোহীর চাপে অনেকটা কোণঠাসা নৌকার প্রার্থী।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, রায়পুরা পৌরসভায় ৯ টি ওয়ার্ডে ১৫ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এ বছর মেয়র পদে ৫ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২৮ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্ধন্ধিতা করছেন।

মেয়র পদে ৫ জন মধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি মাঠে রয়েছেন ২ জন বিদ্রোহী প্রার্থী। বিএনপি সমর্থকও স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে রয়েছেন।

রায়পুরা পৌরসভায় নৌকা প্রতীকে আ’লীগ দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোঃ মাহবুব আলম শাহীন। তার সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে লড়ছেন বতর্মান মেয়র জামাল মোল্লা (মোবাইল) ও শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন (জগ), বিএনপি সমর্থক সাবেক মেয়র আবদুল কুদ্দুস (নারিকেল গাছ) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মোঃ শামিম মোল্লা (হাত পাখা)।

ইতোমধ্যে প্রার্থীরা তাদের প্রচার- প্রচারণা স¤পন্ন করেছে। গত কয়েকদিন বস্ত সময় পার করেছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তারা সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। পৌরসভার উন্নয়নে দিয়েছেন নানান প্রতিশ্রুতি। প্রার্থীদের পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর এলাকার অলিগলিসহ ভোটকেন্দগুলো। প্রত্যেক প্রার্থীই নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তবে ভোটাররা বলছেন, সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেবেন তারা। নির্বাচন এলে শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, তার বাস্তবায়ন চান পৌরবাসী।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ মাহবুব আলম শাহীন বলেন, দলীয় নেতা কর্মী ও সমর্থকরা তার পক্ষে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন। জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী বলে জানান।

আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বতর্মান মেয়র জামাল মোল্লা বলেন, আমি জনগণের সেবক হয়ে সুনামের সাথে পৌরসভা পরিচালনা করেছি। আশা করছি জনগণের ভালোবাসা পেয়ে ভোটের মাধ্যমে পূণরায় মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হবো।

বিএনপি সমর্থক সাবেক মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল কুদ্দুস বলেন, আমি জনগণকে সাথে নিয়ে রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি। বিজয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।

অপর বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, পৌরসভার ভোটাররা আমার পক্ষে রয়েছেন। তারা আমার জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। সুষ্ঠ ভোট হলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।

ইসলামী আন্দোলন সমর্থক প্রার্থী শামিম মোল্লা বলেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই। আমি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। আমার বিশ^াস ভোটাররা আমাকে নিরাশ করবেন না।

এদিকে মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার উন্নয়নে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। চায়ের দোকান ও রাস্তাঘাটে সর্বত্র লোকজনের আলোচনার একমাত্র বিষয় নির্বাচন। অন্যান্য নির্বাচনের মতো প্রার্থীরা এবার উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতিতেই খুশি নন। পৌরসভার রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন চান ভোটাররা।

এদিকে স্বানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আশ্বাস।

নরসিংদী জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আগামী ২৬ ডিসেম্বর রায়পুরা পৌরসভায় প্রথম ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রায়পুরা পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছে ২৭ হাজার ৩২ জন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর হোসেন বলেন, রায়পুরা পৌরসভার নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহন করতে ৯ টি ওয়ার্ডে ১৫ টি কেন্দ্রে মোট ৯ জন ম্যাজিষ্ট্রেট, প্রতিকেন্দ্রে ১০ জন পুলিশ ও ১৭ ঁঁকরে আনসার সদস্য এবং স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে মোট ২ প্লাটুন বিজিবি নিয়োগ করা হয়েছে।

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ