খ্সখবরব প্রতিবেদক
শিবপুরে পঙ্গু মোস্তফা মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে আহতের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার তিনদিনেও তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি। এতে আশাহত হয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন আহত ব্যক্তির পরিবারের লোকজন। গত ৩ দিন ধরে আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় বার বার যোগাযোগ করা সত্ত্বেও থানা কর্তৃপক্ষ নানা রকম অজুহাত দিয়ে কালক্ষেপন করছে জানান অভিযোগকারী।
আহত ব্যক্তির ছোট ভাই থানায় অভিযোগ পত্রের স্বাক্ষর দাতা মো: ফারুক মিয়া এমনটাই জানায় স্থানীয় সংবাদকর্মীদের।
তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে শিবপুর উপজেলার পুটিয়া ইউনিয়নের শাহপুর পাটুয়ারপাড় গ্রামে মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় তার বড় ভাই পঙ্গু মোস্তফা মিয়াকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত আহত করে ওই গ্রামের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মৃত ফজলু মিয়ার ছেলে জজ মিয়া ও তার চাচা মৃত আফতু উদ্দিনের ছেলে লোকমান মিয়া। আহত অবস্থায় মোস্তফা মিয়াকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চাইনিজ কুড়ালের আঘাতে জখম হওয়া স্থানে বেশ কয়েকটি সেলাই দিতে হয়। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে পুলিশ কেইস লিখে দেয় পাশাপাশি পরিবারের লোকদের টেককেয়ারে থাকার জন্য পঙ্গু মোস্তফাকে ভর্তি না দেখিয়ে বাড়ী পাঠিয়ে দেন। সেই সাথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে সে শারিরীকভাবে দূর্বল হয়ে পড়ায় তাকে সাবধানে চলাচল করতে বলেন।
ফারুক মিয়া জানায়, প্রায় দেড় বছর আগে আমার বড় ভাই মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় আহতে হয়ে তার ডান পা আঘাত প্রাপ্ত হয়। এতে সে পঙ্গু মানুষের ন্যায় দিন যাপন করেছে। তবে কয়েকদিন আগে তার পায়ের ভিতর লাগানো থাকা রড খুলে দেওয়ায় চিকিৎকের পরামর্শে লাঠিভর দিয়ে হাটাচলা করছিলেন। কিন্তু সেদিনের ঘটনায় আহত হয়ে বিছানায় পড়ে রয়েছেন। এদিকে ওই মাদক ব্যবসায়ী চক্র বীর দাপটে এলাকায় ঘুরাফেরা সহ আমাদেরকে বিভিন্ন হুমকি-দমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় আমরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এব্যাপারে আহত মোস্তফার স্ত্রী রাজিয়া বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর যাবৎ আহত হয়ে আমার স্বামী ঘরবন্দি হয়ে আছেন। আমি আমাদের ছোট ছোট দুটি ছেলে সন্তানদের নিয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করে আসছি। যেখানে সন্তানদের মুখে দু’বেলা আহার তুলে দিতে হিমশিম খেতে হয় আমাকে এ অবস্থা আমার স্বামীকে বিনা কারণে কুপিয়ে আহত করে পূনরায় ঘরবন্দি করেছে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা। একদিকে পঙ্গুত্বের চিকৎিসা অন্য পরিবারে খরচ জোগান দিতে আমাকে হিমশিম খেতে হয়। এ অবস্থায় আমি তার এই খরচ কোত্থেকে বহন করবো।
তিনি ফরিয়াদ করে বলেন, আমার স্বামীর কি দোষ ছিল। যেখানে সারাদেশে মাদক বিরোধী বিভিন্ন অভিযানসহ মাদকের বিরুদ্ধে প্রশাসন জিরো টলারেন্স ঘোষণা দিয়েছেন। আমার জানা মতে, আমার স্বামী জীবনে কোনদিন একটি সিগারেটও খায়নি শুধু অন্যায়ের প্রতিবাদ করে গেছেন। তার জন্যই তাকে প্রাণনাশের চেষ্টায় কুপিয়ে আহত করেছে মাদক ব্যবসায়ীচক্র। এ অবস্থায় আমার দেবর ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিলেও আজও তা মামলা হিসেবে নথি ভুক্ত করেনি থানা পুলিশ। এব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমার জোড় আবেদন দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
পরে বিষয়টির সত্যতা যাচাই এর জন্য শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাউদ্দিন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, অভিযোগকারীকে মেডিকেল সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে বলেছি। তা আনলেই অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।