আজ ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অবশেষে মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা তারেক মোল্লা গ্রেফতার

মাজহারুল ইসলাম রাসেল

নৌপথে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে ২৮ ব‍্যক্তি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা তারেক মোল্লা (৩২)কে গ্রেফতার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রবিবার (২০ মার্চ) ভোরে বাগেরহাট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত মানব পাচারকারী তারেক রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের বাচ্চু মোল্লার ছেলে। সে নরসিংদী, রায়পুরা ও আশপাশ এলাকা থেকে বিভিন্ন ছলচাতুরীর ও মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে লোক সংগ্রহ করে লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগরে নৌকা যোগে ইতালি পাঠাতেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি লিবিয়ার স্থানীয় সময় রাত ৮টার দিকে ১২ ফুটের মতো ছোট একটি বোটের মধ্যে ৩৫ জনকে নিয়ে সমুদ্র পথে ইতালির উদ্দেশে রওনা হন। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় মাল্টার কাছাকাছি পৌছলে ভোর ৩টার দিকে বোট থেকে একজন সমুদ্রে পড়ে যায়। তাকে তুলতে গেলে বোটটি পিছনের দিকে ভার বেশি হওয়ায় বোটটি উল্টে যায়। সাগরের বড় বড় ঢেউয়ের তোড়ে একেক করে ভেসে যায়। পরে কোস্টগার্ড সদস‍্যরা এসে ৭ জনকে উদ্ধার করে তীরে নেওয়ার পথেই রাশেদুল নামে একজনের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে উদ্ধার হওয়া ছয়জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর প্রায় এক মাস জেলে রেখে দূতাবাসের সহযোগিতায় দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়। অপরদিকে সেদিনের ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছে ২৮ জন। তাদের মধ্যে ১৫ জনই নরসিংদীর।
নিখোঁজ ব‍্যক্তিদের ভাগ‍্যে কি ঘটেছে তা কারো জানা নেই।

নিখোঁজ হওয়া নরসিংদীর ১৫ জন হলেন- রায়পুরার ডৌকারচরের নাদিম সরকার (২২), আলমগীর সরকার (৩৫), আল-আমিন ফরাজী (৩৩), দক্ষিণ মির্জানগরের এস এম নাহিদ (২৫) আমিরগঞ্জের ইমরান মিয়া (২১), আশিস সূত্রধর (২১), সবুজ মিয়া (২৫), হাইরমারার শাওন মিয়া (২২), সেলিম মিয়া (২৪), বেলাব উপজেলার আল আমিন (২৮), নারায়ণপুরের মতিউর রহমান (৩৭), সল্লাবাদের শরীফুল ইসলাম (২৪), সালাউদ্দিন (৩২), মোঃ হালিম (২৬), বিপ্লব মিয়া (২৪)।

নিখোঁজ হওয়া বাকি ১৩ জন ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, বরিশাল, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুর ও সিলেট জেলার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় নিখোঁজ আশিষ এর বাবা অনিল সূত্রধর রায়পুরা থানায় তারেক মোল্লা, মামুন মোল্লা ও সুবল চন্দ্র শীলকে আসামি করে অজ্ঞাত আরও ৫-৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে এই মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য মামুন মোল্লা ও সুবল চন্দ্র শীলকে গত ৮ মার্চ গ্রেফতার করে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তারা বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ