হাফিজুর রহমান
নরসিংদীতে অন্তর (১৩) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাসহ আন্তঃজেলা অটোরিকশা ছিনতাইকারী চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানfন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপরাধ সাহেব আলী পাঠান।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, আল-আমিন (৩৬), বকুল মিয়া (৪৫), অহিদুল ইসলাম মাতাব্বর ওরফে সবুজ (২৫), সগীর (৩১) ও সাজ্জাদ ওরফে শাহাদাত (৩২)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নরসিংদীর মাধবদী থানাধীন খিলগাঁও এলাকার মোঃ কামাল হোসেনের মেঝো ছেলে অন্তর (১৩) বিগত চার মাস যাবত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে তাদের সংসারের ভরণপোষণ করে আসছিল। প্রতিদিনের ন্যায় গত ১ ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে অটো রিকশা চালানোর জন্য বাড়ি থেকে বের হয় । রাতে বাড়ি ফিরে না আসলে তাকে মোবাইল ফোনে কল দিলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর তার পিতা এবং এলাকার লোকজন সম্ভাব্য এলাকায় খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেলে পরের দিন সকালে মাধবদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরের দিন গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) বিকাল পৌনে ৪টার দিকে মাধবদী থানাধীন বালাপুর রোডস্থ দরগাকান্দা গ্রামের কঠুর বাড়ীর পেছনের ডোবা থেকে মাধবদী থানা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে এবং এঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
এঘটনায় নরসিংদী পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম পিপিএম এর নির্দেশে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহেদ আহমেদ এর তত্ত্বাবধানে পুলিশের একটি আভিযানিক দল সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। রবিবার (৫ডিসেম্বর) রাত ৮টার সময় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানাধীন কাঁচপুর এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার রড এবং ছিনতাইকৃত অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার সত্যতা স্বীকার করেছে।
তারা জানায় যে, পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন থানা এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অটোরিকশা ছিনতাই করে আসছে। অটোরিকশা ছিনতাই করাই তাদের নিয়মিত কাজ ।এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তারা উল্লেখিত ঘটনা ঘটায়। তারা সকলেই আন্তঃজেলা অটো ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। সিডিএমএস পর্যালোচনা করে দেখা যায় তাদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক চুরি ও ছিনতাই মামলা রয়েছে। আসামি বকুলের বিরুদ্ধে শিবপুর মডেল থানার এফ আই আর নং ১১/৩৮২, তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৭,ধারা ৪৬১/৩৮০,পেনাল কোড ১৮৬০ ও শিবপুর মডেল থানায় এফআইআর নং ১৮/৩৫৯, তারিখ ১৮ নভেম্বর২০১৯, ধারা ৪৫৭/৩৭৯,পেনাল কোড ১৮৬০,মাধবদী থানার এফআইআর নং১৮/৮৪,তারিখ-১৬ এপ্রিল ২০১৭,ধারা-৩০২/৩৪,পেনাল কোড-১৮৬০ এবং আসামি সাজ্জাদ ওরফে শাহাদাতের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফ আই আর নং-৬৫, তারিখ-২৫ ফেব্রুয়ারি-২০১৯,ধারা-৩৬(১) সারণির১০(ক) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর মামলা রয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে ও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।